বিশুদ্ধ হাদিসের আলোকে ঝড়-বৃষ্টি সংক্রান্ত দোয়া ও আমল PDF
আজকের পোষ্টে আমরা বিশুদ্ধ হাদিসের আলোকে ঝড়-বৃষ্টি সংক্রান্ত দোয়া ও আমল PDF সহ আলোচনা করবো। আমরা অনেকেই জানি না কখন কোন দোয়া ও আমল করতে হয়। এতে আমরা মূল্যবান নেকী অর্জন থেকে বঞ্চিত হয় এবং বিপদের সময়ও সঠিক দোয়া ও আমল করতে পারিনা। আজকের পোষ্টে অতি গুরুত্বপূর্ন এবং বিশূদ্ধ হাদিসের আলোকে ঝড়-বৃষ্টি সংক্রান্ত দোয়া ও আমল তুলে ধরবো এবং এই পোষ্টের শেষেই পেয়ে যাবেন পিডিএফ ।
ঝড়-তুফানের সময় দু'আ
মা আয়েশা বলেন, বাতাস যখন দ্রুত প্রবাহিত হতো তখন রাসূল বলতেন,
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَهَا وَخَيْرَ مَا فِيهَا وَخَيْرَ مَا أُرْسِلَتْ بِهِ وَأَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا وَشَرِ مَا فِيْهَا وَشَرِ مَا أُرْسِلَتْ بِهِ
উচ্চারণ : আল্ল-হুম্মা ইন্নী আসআলুকা খয়রহা- ওয়া খয়র মা- ফীহা ওয়া খয়র মা- উরসিলাত্ বিহী ওয়া আ’উযুবিকা মিন শাররিহা- ওয়া শাররি মা- ফীহা ওয়া শাররি মা- উরসিলাত্ বিহ।
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে ঝড় ও বাতাসের কল্যাণ চাই, যে কল্যাণ তার মধ্যে নিহিত রয়েছে এবং যে কল্যাণ তার সাথে প্রেরিত হয়েছে। আর আমি আশ্রয় চাচ্ছি তোমার নিকট তার ক্ষতি থেকে, তার ভিতরে নিহিত ক্ষতি থেকে এবং যে ক্ষতি তার সাথে প্রেরিত হয়েছে, সে ক্ষতি থেকে’ (ছহীহ বুখারী; ছহীহ মুসলিম, হা/৮৯৯; মিশকাত, হা/১৫১৩)
উল্লেখ্য যে, ঝড়-তুফানের সময় আযান দেওয়া মর্মে কুরআন ও হাদীছের কোনো বর্ণনা পাওয়া যায় না সুতরাং তা বিদআতের অন্তর্ভূক্ত।
মেঘের গর্জন শুনলে পঠিতব্য দু'আ
আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়ের যখন মেঘের গর্জন শুনতেন তখন কথা বলা ছেড়ে দিতেন এবং বলতেন,
سُبْحَانَ الَّذِي يُسَبِّحُ الرَّعْدُ بِحَمْدِهِ وَالْمَلَائِكَةُ مِنْ خِيفَتِهِ
উচ্চারণ : সুবহা-নাল্লাযী ইয়ুসাব্বিহার রাদু বিহামদিহী ওয়াল মালা-য়িকাতু মিন বীফাতিহ।
অর্থ : ‘পাক পবিত্র সেই মহান সত্তা, যাঁর পবিত্রতা বর্ণনা করে প্রশংসা সহকারে মেঘের গর্জন এবং ফেরেশতাগণ তাঁর ভয়ে ভীত হয়ে পবিত্রতা বর্ণনা করে । ( মুয়াত্তা মালেক, হা/৩৬৪১: মিশকাত, হা/১৫২২, সনদ ছহীহ )
বৃষ্টি প্রার্থনার দু'আ
(১) জাবের বলেন, আমি রাসূল কে হাত উঠিয়ে বলতে শুনেছি-
اللَّهُمَّ اسْقِنَا غَيْنًا مُغِيْتًا مَرِيئًا مَرِيعًا نَافِعًا غَيْرَ ضَارٌ عَاجِلًا غَيْرَ آجِل
উচ্চারণ : আল্ল-হুম্মাকিনা- গইছাম মাগীছাম মারীআম মারী’আ- না-ফি আন্ গইর স্ব-ররিন ‘আ-জিলান গয়র আ-জিল ।
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! তুমি আমাদেরকে এমন বৃষ্টি দাও, যা ফসল উৎপাদনের জন্য উপযোগী,কল্যাণকর,ক্ষতিকারক না,দ্রুত আগমনকারী,বিলম্বকারী না ‘ ( আবূ দাউদ, হা/১১৬৯; মিশকাত, হা/১৫০৭, সনদ ছহীহ )
(২) আমর ইবনু শুআইব তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন, তাঁর পিতা তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেন যে, তাঁর দাদা বলেন, নবী করীম (সাঃ) – যখন বৃষ্টি প্রার্থনা করতেন তখন বলতেন,
اللهُمَّ اسْقِ عِبَادَكَ وَبَهِيْمَتَكَ وَانْشُرْ رَحْمَتَكَ وَأَحْي بَلَدَكَ الْمَيِّتَ
উচ্চারণ : আল্ল-হুম্মাক্কি ইবা-দাকা ওয়া রাহীমাতাকা ওয়াংশুর্ রহ:মাতাকা ওয়া আহ্:য়ী বালাদাকাল মাইয়িত্ ।
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! তুমি তোমার বান্দাগণকে এবং চতুষ্পদ জন্তুগুলোকে পানি পান করাও, তোমার রহমত পরিচালনা করো, আর তোমার মৃত শহরকে জীবিত করো’ ( আবূ দাউদ, হা/১১৭৬; মিশকাত, হা/১৫০৬, হাসান )
বৃষ্টি বন্ধের দু'আ
আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূল বৃষ্টি হওয়ার সময় বলতেন,এক সপ্তাহ ব্যাপী বৃষ্টি হতে থাকলে জনৈক ব্যক্তি এসে বলেন, হে আল্লাহর রাসূল। বৃষ্টি বন্ধের জন্য দু’আ করুন। তখন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন,
اللَّهُمَّ حَوَالَيْنَا وَلَا عَلَيْنَا اللَّهُمَّ عَلَى الْأَكَامِ وَالظُّرَابِ وبُطُونِ الْأَوْدِيَةِ وَمَنَابَتِ الشَّجَرَةِ
উচ্চারণ : আল্ল-হুম্মা হাওয়া পায়না-ওয়ালা আলায়না- আল্ল-হুম্মা ‘আলাল আকা-মি ওয়ায় জ্বির-বি ওয়া বুতুনিল আওলিয়াহ, ওয়া মানা-বাতিশ শাজারহ্ ।
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমাদের পার্শ্ববর্তী এলাকায় বর্ষণ করো, আমাদের উপর নয়। হে আল্লাহ। উঁচু ভূমিতে ও পাহাড়-পর্বতে, উপত্যকা অঞ্চলে এবং বনাঞ্চলে বর্ষণ করো’ (ছহীহ বুখারী, হা/১০১৪: ছহীহ মুসলিম, হা/২১১৫: মিশকাত, হা/৫৯০২)।
বৃষ্টি শেষ হওয়ার পর দু'আ
নবী (সাঃ) বৃষ্টি শেষে বলতেন,
مُطِرْنَا بِفَضْلِ اللهِ وَرَحْمَتِهِ
উচ্চারণ : মুত্বিনা- বিফায়লিল্লা-হি ওয়া রহমাতিহ্।
অর্থ : ‘আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমতে আমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষিত হয়েছে (ছহীহ বুখারী, হা/১০৭; ছহীহ মুসলিম, হা/৭১; আবূ দাউদ, হা/৩৯০৬; মিশকাত, হা/৪৫৯৬)।